স্বামীকে জামিনের শর্তে আন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে এনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

Mar 9, 2025 - 14:04
 0
স্বামীকে জামিনের শর্তে আন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে এনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

নরসিংদীতে সাত মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে (২৮) তিনদিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় এজাহারনামীয় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে ভুক্তভোগী বাদি হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

 

মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের আসমান্দিরচর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে ইকবাল হোসেন (৪৩) ও একই গ্রামের আবদুল মোতালেবের ছেলে পাপ্পু মিয়া (২৯)-সহ অজ্ঞাত আরো তিনজন।


ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর অভিযোগ, তার স্বামীর জামিনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে তিন দিন আটকে রেখে তাকে পালাক্রমে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও পেশায় গৃহিনী। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাধবদী থানা পুলিশ তার স্বামীকে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারাগারে পাঠানো হয়।


গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাতটায় গৃহবধূর মোবাইলে কল করেন ইকবাল। ওই সময় তিনি বলেন, ‘আমার কাছে পাপ্পু নামের এক উকিল আছে, তোর স্বামীর জামিন করে দিতে পারবে। তুই পাঁচদোনা আয়, তোর সাথে কথা বলব।’

 
ইকবালের কথা মতো সকাল আটটার দিকে পাঁচদোনা মোড়ের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় গেলে ইকবাল ওই গৃহবধূকে একটি কক্ষে নিয়ে যান।

সেখানে আগে থেকেই ছিলেন চারজন। ইকবাল তখন তাকে পাপ্পু নামের একজনকে উকিল বলে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে দুটি মোবাইল কেড়ে নিয়ে তা বন্ধ করে ফেলা হয়। এরপর পাপ্পুসহ বাকি তিনজন ওই ঘর থেকে বের হয়ে গেলে ইকবাল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে ইকবাল সেখান থেকে গেলে পাপ্পুসহ বাকি তিনজন প্রবেশ করেন।

ওইসময় ওই গৃহবধূ পানি খেতে চাইলে পাপ্পু কৌশলে পানির সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দিলে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। পরে জ্ঞান ফিরলে তিনজনকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পান। পরে সবাই পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ওই গৃহবধূকে ইয়ারা ট্যাবলেট সাদৃশ্য কিছু জোর পূর্বক সেবন করানো হয়। তাকে তিনদিন আটকে রাখার পর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টায় অভিযুক্ত ইকবাল গৃহবধূর বাড়ির পাশে সড়কে ফেলে মোবাইল দুটি দিয়ে চলে যায়।


 
ওই গৃহবধূ জানান, ইকবাল চলে যাওয়ার সময় বলে গেছে ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে আমাকে মেরে ফেলবে। ভয়-আতঙ্কে ঘটনা কাউকে জানাননি তিনি। তার স্বামী ২ মার্চ জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে তার শরীর খারাপের কারণ জানতে চান। ৭ মার্চ ঘটনার বিস্তারিত স্বামীকে জানান তিনি। পরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওইদিন রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তার স্বামী। এরপর স্বামী, স্বজনসহ পরদিন দুপুরে মাধবদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

মাধবদী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে তিন দিন আটকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে ইকবাল নামের একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow