দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র তদবির বাণিজ্য, আয় শতকোটি টাকা

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত দুই কর্মকর্তা (ছাত্র প্রতিনিধি) তুহিন ফারাবি ও মো. মাহমুদ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা চিকিৎসক, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, পরিচালক, উপপরিচালক, সিভিল সার্জন নিয়োগ-বদলির মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুজন মিলে মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, পরিচালক, উপপরিচালক, সিভিল সার্জন নিয়োগ-বদলিতে ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা আদায় করতেন।
এরপর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সিনিয়র সচিব হিসাবে নিয়োগ পান এক কর্মকর্তা। তাকেও নয়ছয় বুঝিয়ে বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি করেন তারা।
এছাড়া সিনিয়র স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ বদলিতে তারা দুই লাখ টাকা করে আদায় করতেন। এমনকি হজ টিমে নার্স ও ডাক্তারদের নাম ঢুকানোর জন্য টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ৮ আগস্টের পর সাবেক স্বাস্থ্য সচিবকে দিয়ে বেশ কিছু চিকিৎসক বদলি করান তুহিন ফারাবী ও ডা. মাহমুদুল হাসান। প্রতিটি বদলিতে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন তারা।
এছাড়া ৫ আগস্টের পর পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের স্থলে নতুন ঠিকাদার নিয়োগে তারা কমিশন বাণিজ্য করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে তুহিন ফারাবীকে অপসারণ করা হলেও মাহমুদুল হাসান এখনো বহাল তবিয়তে। সেসব টাকা রাশিয়ায় পাচার করেছেন বলে খোদ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, মাহমুদ আগে থেকেই রাশিয়ায় বসবাস করতেন। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি দেশে ফেরেন। তখন ফারাবী তাকে মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পাইয়ে দেন। তিনি রাশিয়া থেকে দেশে আর নাও ফিরতে পারেন।
অভিযোগের বিষয়ে মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাকে অপসারণ করা হয়নি। আমি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। আগামী মাসে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) আমার মৌখিক পরীক্ষা আছে। এছাড়া আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরীক্ষায় ভাইভা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এসব কারণে আমি পদত্যাগ করেছি। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে ৪শ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি এক টাকার দুর্নীতি করেছি কেউ তা প্রমাণ করতে পারবেন না।
এদিকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক পার্সনাল অফিসার (ছাত্র প্রতিনিধি) তুহিন ফারাবী এবং বর্তমান ব্যক্তিগত মো. মাহমুদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জানা গেছে, তারা অফিসে নেই। তুহিন ফারাবীকে ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। অপর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বর্তমানে একজন রোগীর সঙ্গে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। দুজনের হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
সূত্র: যুগান্তর।
What's Your Reaction?






