সাঈদীর মৃত্যু: আজ সারা দেশে জামায়াতের মিছিল
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় হামলা, ফুরকান উদ্দীনকে হত্যা করার প্রতিবাদে ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ, সংবিধানে বর্ণিত অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা পরিবর্তে বাধাদান গ্রেপ্তার ও পুলিশের গুলিতে আহত করার প্রতিবাদে আজ সারা দেশে শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে জামায়াত।
বুধবার (১৬ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয় দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
১৬ আগস্ট জামায়াত আমির বলেন, আমরা আজ দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় হামলা, ফুরকান উদ্দীনকে হত্যা করার প্রতিবাদে ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং সংবিধানে বর্ণিত অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা পরিবর্তে বাধাদান গ্রেপ্তার ও পুলিশিরে গুলিতে আহত করার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সারা দেশে দোয়া, বুধবার (২৩ আগস্ট) সারা দেশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে, সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তার আগে রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত সাঈদীকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই রাতেই তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়।
সাঈদী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পিরোজপুর-১ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। এর পর থেকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।
জানা গেছে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন (দলটির পূর্ণাঙ্গ সদস্য) হন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাঈদী ২০০৯ সাল থেকে জামায়াতের নায়েবে আমিরের পদে ছিলেন।
What's Your Reaction?