বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জোবায়দা রশীদ

Aug 27, 2023 - 18:33
 0  69
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জোবায়দা রশীদ
চবি হলুদ দলের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেজর রশীদের স্ত্রী জোবায়দা রশীদ। তিনি চট্টগ্রামের আন্ধা হাফিজের কাছে দোয়া নিতে এসেছিলেন। আন্ধা হাফিজ তাকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। দোয়া দরূদ শিখিয়ে দেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে চবি হলুদ দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং ‘বঙ্গবন্ধু : রাষ্ট্রনায়কের সাফল্য ও মর্মন্তুদ ট্র্যাজেডি’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন চবির হলুদ দলের আহ্বায়ক ও কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।

প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুহিবুল আজীজ বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) স্বপ্নসৌধের প্রাথমিক সিঁড়িতে পা রাখা অবস্থাতেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় পৃথিবী থেকে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এক সুগভীর দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের ফল। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার সাফল্যে ভীত-শঙ্কিত এবং তার সাফল্য যাতে আর প্রভাববিস্তারী হতে না পারে সেই হীন চক্রান্তে লিপ্ত গোষ্ঠীই তার হত্যাকারী।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের অনেকেরই উত্তরসূরি রয়ে গেছে এ দেশে। এ উত্তরসূরি দ্বিবিধ- তার হত্যাকারীদের উত্তরসূরি এবং হত্যাকারীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের উত্তরসূরি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে রয়েছে একটা আন্তর্জাতিক চক্র। যার পুরোটা এখনো উন্মোচিত হয়নি। হয়তো ভবিষ্যতে কখনো হবে। কিন্তু সেদিন হয়তো আমরা থাকব না।

অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার বক্তৃতায় বলেন, স্বামী ও পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু একজন ব্যর্থ মানুষ। কিন্তু একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি শতভাগ সফল। কেননা, তিনি তার ৫৫ বছর জীবনে মাত্র ১২ ভাগ সময় পরিবারকে দিয়েছিলেন। আর বাকি পুরোটা সময় তিনি দেশের মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে বাকশাল করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কারণ, বঙ্গবন্ধু চাইতেন, বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক, সুখে থাকুক। তাদের কথা ভেবেই তিনি বাকশাল করতে চেয়েছিলেন। মোস্তাক বঙ্গবন্ধুকে বলেছিল, অত বাকশাল বাকশাল করো না। তখন বঙ্গবন্ধু তাকে বলেছিলেন, আমি বাকশালও করব, সমাজতন্ত্রও করব। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার এতেই রক্ষা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিপদমুক্ত নয়, ষড়যন্ত্র মুক্ত নয়। কেননা, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলেও ষড়যন্ত্রকারীরা আত্মসমর্পণ করেনি। তার প্রমাণ, ২১ শে আগস্টের বোমা হামলা। সুতরাং, আবারও দাবি জানাচ্ছি, বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনায় আরও তদন্ত করা হোক, শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। তদন্ত কমিটি যদি না হয়, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে ১৫ আগস্টের মতো ঘটনা, ২১ শে আগস্টের মতো ঘটনা আবারও ঘটবে।



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow