তসলিমা নাসরিন যা বললেন পরীমণিকে !
তসলিমা নাসরিন যা বললেন পরীমণিকে !
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের স্পষ্ট কথার জন্য বিতর্কে থাকেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। অন্যদিকে নিজের ব্যক্তিগত কারণে নিত্যদিন আলোচনায় আসেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমণি। গত ১০ আগস্ট ছেলের জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করেন এ নায়িকা। আর জন্মদিনের আগে পরী পুত্র আলোচনায় ছিল নাম বদলের কারণে এদিকে শনিবার (১২ আগস্ট) সে বিষয়ে নিজের মন্তব্য জানালেন তসলিমা নাসরিন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন লেখিকা। তিনি লেখেন, “ঠিক এক বছর আগে লিখেছিলাম, স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে বাচ্চার নাম রাখাটা বিশেষ পছন্দ হয়নি। স্বামীরা আজ আছে, কাল নেই। সন্তান তো চিরদিনের। পরী তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে সুন্দর একটি বাংলা নাম রাখতে পারতেন। পরীর জায়গায় আমি হলে ‘রাজ্য’ নয়, ডাকনাম রাখতাম ‘পরমানন্দ’। ভালো নাম ‘শাহীম মুহাম্মদ’ নয়, রাখতাম ‘পরমানন্দ প্রাণ’।”
“আজ শুনি পরীমণি তার নিজের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে ছেলের নাম রেখেছেন বা রাখতে চাইছেন, ‘পদ্ম’ অথবা ‘পূণ্য’। দুটো নামই সুন্দর। ফুলের নামে শুধু মেয়ের নয় ছেলের নামও হওয়া উচিত। ফুলের অনেক নামই অবশ্য ছেলেদের নাম যেমন: কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, অম্বুজ, নলিনী, কামিনী, বকুল, সরোজ, নীরজ, কিংশুক, পলাশ এরকম অনেক। ‘পূণ্য’ নামটি আমার বিশেষ পছন্দের।”
পরীর প্রসংশা করে তসলিমা লেখেন, ‘পরীমণি তার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং স্বজন বন্ধুদের নিয়ে খুব ঘটা করে ছেলের জন্মদিনের উৎসব করেছেন। এই উৎসবে ছেলের পিতার উপস্থিতি জরুরি ছিল না। পরীমণি দেখিয়ে দিয়েছেন তার সন্তানকে একাই তিনি লালন-পালনই শুধু নয়, সন্তানের জন্য আনন্দ উৎসবের বিশাল আয়োজনও করতে পারেন। মেরুদণ্ড দৃঢ় হলে, আত্মবিশ্বাসী হলে স্বামীকে দরকার হয় না।’
অত্যাচারী স্বামী নিয়ে সারা বিশ্বে কত মেয়েই যে অশান্তির সংসার করছে, তাদের কিন্তু একা বাঁচার সাহস করতে হবে। জীবন একটিই, এই একটি মাত্র জীবনকে নিষ্পেষিত আর নির্যাতিত হতে দেয়া কোনো বুদ্ধির কাজ নয়।
এ সময় পরীমণিকে তার সততা, স্বতস্ফূর্ততা, সৎসাহসের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
লেখিকা আরও লেখেন, ‘এই সময় কিছু কথা জরুরি বলে মনে হচ্ছে বলে বলছি, সন্তান জীবনের সব নয়। সন্তানকে ঘিরে জীবন আবর্তিত হওয়া উচিত নয়। যদিও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ চায়, মেয়েদের জীবনের কোনো মূল্য না থাকুক, সন্তান পালনই তাদের একমাত্র বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হোক। পরীমণি যতই সন্তান নিয়ে মেতে থাকেন, পুরুষেরা ততই তাকে বাহবা দেয়। ‘ভালো মা’ উপাধি দেয়। সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে হয় না, সন্তানকে ভালো গাইড করলেই সন্তান ভালো মানুষ হয়।
"পরীমণিকে আমি বাহবা দেব তিনি যদি নিজের অভিনয়ের কাজটিতে আরও মনোযোগী হন, অভিনয়ের চর্চা আরও করেন, অভিনয়ে আরও পারদর্শী হন, আরও বড় শিল্পী হয়ে ওঠেন। মনে রাখতে হবে মাতৃত্বেই মেয়েদের জীবনের সার্থকতা নয়। শিল্পীর কাজ অন্যত্র। ‘ভালো মায়ের চেয়ে পরীমণির বড় পরিচয় হোক ‘ভালো শিল্পী’। ‘ভালো মা’ যে কোনো মেয়েই হতে পারে, ‘ভাল শিল্পী’ যে কোনো মেয়েই হতে পারে না।"
What's Your Reaction?