নড়াইলের সাদ্দাম হোসেন এখন সফল ফ্রিল্যান্সার
শূন্য থেকে সাফল্য লাভ করেছেন সাদ্দাম হোসেন। তার এই গল্প এখন অনেক তরুণ-তরুণীকে অনুপ্রেরণা জোগায়। এছাড়াও আপনার আরো কিছু ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর এখানে!
খুলনার কয়রা উপজেলার দুই নম্বর কয়রা গ্রামের আবদুস সাত্তার ও সায়রা বেগমের ছোট ছেলে সাদ্দাম হোসেন। মা-বাবাসহ বড় ভাই, ছোট দুই বোন রয়েছে তার। টানাপোড়েনের সংসারের হাল ধরতে একসময় সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। কোনো উপায় না পেয়ে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা বেতনে করেছেন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি। জীবিকার প্রয়োজনে প্রায় পাঁচ বছর রাজমিস্ত্রির কাজও করেছেন। এভাবেই চালাতেন তার সংসার।
সাদ্দাম বলেন, "অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছি। তবে হাল ছাড়িনি। বিক্রয় প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সিকিউরিটি গার্ড, রাজমিস্ত্রির কাজ করেছি। পরিশ্রম অনুযায়ী বেতন পাইনি। অবশেষে অনলাইন প্ল্যাটফরমে মিলেছে সাফল্য।"
অনলাইনে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সাদ্দাম বলেন, "ফ্রিল্যান্সার বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসের কাজটি শুরু করেছি ২০১৩ সালে। প্রথমে কাজ শেখার জন্য ভালো কোনো শিক্ষক পাইনি। তবে হাল ছাড়িনি। ‘ওয়েব ডিজাইন’ দিয়ে অনলাইন জগতে প্রথমে কাজ শুরু করি। পরে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজসহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন ধরনের কাজ করছি। সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রতি মাসে আয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা।"
এখন ইউটিউব, ফ্রিল্যান্সিং, ফেসবুক পেজসহ অনলাইন মার্কেটিংয়ের ওপর নিয়মিত ক্লাস নেন সাদ্দাম। সরাসরি ও অনলাইনে তার ক্লাস করে অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার।
সাদ্দামের সাফল্য নিয়ে তার স্ত্রী সোনালী হোসেন জানান, স্বামীর কাজ ও আয় নিয়ে খুশি পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
শূন্য থেকে সাফল্য লাভ করেছেন সাদ্দাম হোসেন। তার এই গল্প এখন অনেক তরুণ-তরুণীকে অনুপ্রেরণা জোগায়। সাদ্দাম হোসেনের শিক্ষার্থী নড়াইলের দলজিতপুরের মেহেদী, রাজশাহী জেলার রফিকুল ইসলাম ও ময়মনসিংহের আমিনুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, সাদ্দামের কাছ থেকে তারা বিনামূল্যে ক্লাস করে ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এখন নিজেরাই দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ভালো উপার্জন করছেন। এখন অন্যদের ফ্রিল্যান্সিং শেখাচ্ছেন। দুর্গাপুর এলাকার জাকির হোসেন বলেন, সাদ্দাম এলাকার ‘ফ্রিল্যান্সার মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি নিজে সফল হয়েছেন। অনলাইন প্ল্যাটফরমে অন্যদেরও সফল করার লক্ষ্যে সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি প্রসেনজিৎ কুন্ডু বলেন, সাদ্দামের সফলতা দেখে আরও অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী হবেন। দিন দিন অনলাইনে মার্কেটপ্লেস বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদাও বাড়ছে। এ খাতে মানুষ আগ্রহী হলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে যেমন নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারবেন, তেমনি দেশের অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। সাদ্দামের বোন সায়মা আক্তার বলেন, ‘ভাইয়ের আয়ে আমরা সবাই খুশি। ফ্রিল্যান্সিং আয়ের ওপর নির্ভর করেই দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে পরিচালনা করছেন।’
ADS:Visite Choyej Freelance Services Marketplace
What's Your Reaction?