স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন বিএনপি নয়, এখন বিরোধীদল জাতীয় পার্টি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জাতীয় সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি। বিএনপি এখন বিরোধী দল নয়। বিএনপি এখন স্বীকৃত জনবিচ্ছিন্ন একদল।
বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং’র পরীক্ষামূলক কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশ ও মানুষের সম্পদ নষ্ট করে আবারও দেশকে অকার্যকর করতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজত্ব কায়েম করছে বিএনপি। ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা (বিএনপি) শুধু মানুষ মারে না, বিদেশিও মারে। তাবেলা সিজারকে হত্যা করল, জাপানি একজনকে হত্যা করল। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মসজিদের ইমামকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। সেই কথা কিন্তু এদেশের মানুষ ভোলেনি। সেই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের কথা এদেশের মানুষ ভোলেনি।ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামকে অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু গুলশান এলাকার কাজ করলে চলবে না, আমাদের এলাকার দিকেও একটু লক্ষ্য রাখবেন। সন্ধ্যার পরে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে চলাচলের কোনো জায়গা থাকে না। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, কথা অনেক অনেক লোক অনেক কথা বলেছেন আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা শতভাগ না হলে আমরা বলতে পারি ৮০ শতাংশ আমরা সাকসেসফুল। দুর্বার গতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তার একটি কারণ হলো আমরা ডিজিটাল। আজকে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখেন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে, হয়েছে। তিনি বলেছেন মেট্রোরেল হবে, তাও হয়েছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আজ ডিএনসিসিতে স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং চালু হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্মার্ট সোসাইটি দরকার, স্মার্ট এডুকেশন দরকার, স্মার্ট গভার্ন্যান্স দরকার। সেটিও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে হবে।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আতিকুল ইসলাম বলেন, দেশে এগিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। তার নেতৃত্বেই আমরা এগিয়ে চলেছি। আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে, জয়যুক্ত করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের যে ভিশন সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের বিরোধী যারা আছে তারা যত পারে চেষ্টা করছে দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে। আমরা কখনো পিছিয়ে যাব না, আমরা এগিয়ে যাব। আমি আগেও বলেছি নৌকার কোনো ব্যাক গিয়ার নেই। নৌকার একটাই গিয়ার, সেটা হলো ফ্রন্ট গিয়ার। নৌকার যে কোনো ব্যাক গেয়ার নেই তার আরও একটি প্রমাণ হচ্ছে আজকে এই স্মার্ট পার্কিং উদ্বোধন।তিনি বলেন, আমি জনগণকে অনুরোধ করব, নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানাব আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া ঢাকা শহরে স্মার্ট পর্কিং অসম্ভব। পর্যায়ক্রমে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন পতিত এলাকায় এ স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থা গুড়ে তোলা হবে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট সিটি কর্পোরেশন গড়ে তুলব এ অঙ্গীকার করছি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আজকে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকাবাসী স্মার্ট পার্কিংয়ের যাত্রা শুরু করল। স্মার্ট পার্কিংয়ে প্রথম দুই ঘণ্টার জন্য আমরা ফ্রি নির্ধারণ করেছি ৫০ টাকা, পরবর্তী ঘণ্টার জন্য আরও ৫০ টাকা। অর্থাৎ তিন ঘণ্টার জন্য একজনকে গুনতে হবে ১০০ টাকা। এরপরে প্রতি ঘণ্টার জন্য গুনতে হবে ১০০ টাকা করে। যে কেউ এখানে অনলাইনের মাধ্যমে বুকিং করে গাড়ি রাখতে পারবে এবং অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবে।মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অনলাইনে ট্যাক্স নিচ্ছে যেখানে কোন ক্যাশে হোল্ডিং ট্যাক্স নেওয়া হবে না। আমরা অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স নিচ্ছি। আপনারা কেউ হোল্ডিং ট্যাক্স সশরীরে এসে দেবেন না, সবাই অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করবেন। কারণ কিছু কিছু অসাধু কর্মকর্তা আছে যারা আপনাকে 'আকাশের যত তারা সিটি কর্পোরেশনে তত ধারা' এগুলো দেখিয়ে দেবে।
তাই অনলাইন ওপেন করবেন আপনার ট্যাক্স আপনি দিয়ে দেবেন। ইতোমধ্যে আমরা অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স আমরা চালু করে দিয়েছি। কোনো অভিযোগ জানাতে আমরা সবার ঢাকা অ্যাপ চালু রেখেছি। যে কেউ যে কোন জায়গা থেকে বসে অভিযোগ জানাতে পারছেন এবং আমরা তাৎক্ষণিক তা সমাধান করে দিচ্ছি। তিনি বলেন, সবার ঢাকা অ্যাপে আসা অভিযোগগুলোর মধ্যে আমরা ৯৮ শতাংশ সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যে করে দিয়েছি। এসব অনলাইন কার্যক্রমই হলো স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ। দুর্নীতি মুক্ত এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য আমরা এরকম অনলাইন সিস্টেম ইতোমধ্যে চালু করে ফেলেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিরোধীদল সহিংসতা করছে আর আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য কাজ করছে। কিন্তু তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে। আমরা উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছি; আর তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। ডিএনসিসির তথ্য কর্মকর্তা মো. পিয়াল হাছানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকসহ কাউন্সিলররা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
What's Your Reaction?