প্রধানমন্ত্রী বলেন চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না
চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।সমাবেশের আগে প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেন। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা।
কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেওয়ায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার কাছে ক্ষমতা নয়, দেশের স্বার্থই বড়। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে- এমন দৈন্যতায় শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না বলেও জানান তিনি। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিল। ফলে আমরা ওই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।
নরসিংদীর পলাশে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব এই কারখানায় এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক উৎপাদন। জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এই কারখানায় বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। দিনে উৎপাদন হবে ২ হাজার ৮০০ টন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের অক্টোবরে কারখানার নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হলে প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। পরে একই বছরের ১৬ আগস্ট পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু হয়। যার দায়িত্ব পায় চীনের সিসি সেভেন এবং জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এরপর ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১১০ একর জমির ওপর নির্মিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা আর জাপান ও চীনের ঠিকাদারদের যৌথ কনসোর্টিয়াম ব্যাংক অব টোকিও-মিৎসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড ও দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকার ঋণ দেয়।
What's Your Reaction?