বরগুনায় কুকুর আতঙ্কে স্কুলে যেতে পারছে না শিশুরা
কারো গোয়ালের গরু-ছাগল, কারো রান্না ঘরের খাবার, হাস-মুরগি থেকে শুরু করে পথে ঘাটে বৃদ্ধ ও স্কুলগামী শিশুদের ওপর যখন তখন আক্রমণ। এমন ভাবেই বরগুনা সদর উপজেলার খাকবুনিয়ায় কুকুর আতঙ্কে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা জানান, এ বিষয় স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবগত করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদসহ জেলা প্রশাসনের কাছে এ বিষয় প্রতিকারের দাবি জানিয়েছেন।
নিমতলী মাইঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ বলে, আমি ও আমার সহপাঠীরা কুকুরের কারনে এখন স্কুলে যেতে ভয় পাই। স্কুলে যাওয়া আসার পথে সব যায়গাই হিংস্র কুকুর পথ আগলে রাখে। আমাদের তাড়া করে ও কামড়াতে চেষ্টা করে।
মো. আবুল নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমাকে একা পেয়ে রাস্তার মধ্যে অনেকগুলো কুকুর তাড়া করে। একপর্যায়ে পায়ে কামড় দিলে আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে আমাকে রক্ষা করে। এভাবে কুকুরের আতঙ্কে কতদিন চলবে। বেওয়ারিশ কুকুরগুলো নিধনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ভুক্তভোগী সোলাইমান বলেন, আমি কুকুরের কামড়ে ভ্যাক্সিন নিচ্ছি তবুও ভয়ে বাইরে নামতে পারছি না। দ্রুত এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত।
হালিমা নামের এক গৃহিণী বলেন, কুকুরে আমাদের হাঁস-মুরগি নিয়ে যায়। বড় বড় মুরগি মেরে ফেলে। ঘরে উঠে আমাদের ভাত তরকারি নষ্ট করে। এই বেওয়ারিশ কুকুরগুলো নিধন করা হোক। আর কারো পালিত কুকুর থাকলে বেল্ট পরিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখুক। নয়তো অন্যের ক্ষতি করলে উল্টো আঘাতে মারা পড়তে পারে।
কৃষক জাফর বলেন, এলাকায় কুকুর বেড়েছে। কয়েকটি কুকুর আমার গরু ও ছাগল কয়েকবার কামড়িয়ে আহত করছে। কুকুরের উপদ্রব এতোটাই অসহ্যকর হয়ে গেছে যে এলাকার প্রায় সকল পরিবারেরই এরা ক্ষতি করছে।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক শাহ আলম বলেন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা কুকুরের জ্বালায় ঠিকমতো স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারে না। এ বিষয় আমরা এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে করে সরকারিভাবে হিংস্র কুকুরগুলো নিধন করা হয়।
স্থানীয় চিকিৎসক আব্দুল মালেক খান বলেন, এই এলাকায় কেউ কুকুর পোষে না। এলাকায় কিছু বেওয়ারিশ কুকুর আছে যাদের তাড়া ও কামড়ে ছোট বাচ্চারা এবং বৃদ্ধারা আহত হচ্ছে। কামড়ে আহতরা ভ্যাকসিন নিচ্ছে। অনেকেই চিকিৎসাও নিতে পারেনি। জলাতঙ্কের ভয়ে আছি।
স্থানীয় এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির বলেন, এ বিষয়ে তারা আমার কাছে মৌখিক ভাবে বলেছে। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে ব্যাবস্থা নিতে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে লিখিত আবেদন করতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি।
What's Your Reaction?