বরগুনায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যা; ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন এসপি
বরগুনায় সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার আবদুস সালাম। ১৩ মার্চ দুপুরে বারগুনা প্রেসক্লাবের ৩য় তলা (ঘটনাস্থল) পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ মিজানুর রহমান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ হেলাল।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবে ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে এনটিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে সাংবাদিক তালুকদার মাসুদের উপর হামলা করেন সাংবাদিক নামধারী কয়েকজন সন্ত্রাসী। হামলার পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত দুই মার্চ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন সাংবাদিক মাসুদ। হত্যার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক মাসুদের স্ত্রী সাজেদা। প্রধান আসামী সোহেল হাফিজসহ ১৩ জন আসামী মঙ্গলবার মহামান্য হাই কোর্টে অন্তরবর্তিকালিন জামিনের আবদেন করেন। মহামান্য হাই কোর্ট তাদের জামিন দেয়নি। এদিকে মাসউদ হত্যার বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে বরগুনা শহর উত্তাল।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার নিহত মাসউদের স্ত্রী সাজেদা, মেয়ে তন্নি ও ছেলে তানহা বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পূর্ব গেটে বটতলায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যার আসামীদের গ্রেফতার দাবিতে অবস্থান করেন।এ সময় মাসউদের নাবালক দুটি সন্তান ও স্ত্রীর কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে উঠে। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করেন। এর পরের দিন বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী মুশফিকুল ইসলাম আরিফ, মিজানুর রহমান এম. হারুন অর রশিদ রিংকু বলেন, সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে ১৯ ফেব্রুয়ারী সাংবাদিক সোহেল হাফিজ, আরিফ, মিরাজ,কাশেম হাওলাদারসহ অনেকে অমানসিক নির্যাতন করে প্রেসক্লাবের মেঝেতে ফেলে রাখে।পানি,পানি বলে চিৎকার করলেও মাসউদ তালুকদারকে কেহ পানি দেয়নি।
মামলার সাক্ষী মিজানুর রহমান বলেন, আমার সামনে সোহেল হাফিজ ও তার দলবল তালুকদার মাসউদকে মারধর করে। আমি পুলিশ সুপারের কাছে সেই ঘটনাই বলেছি। প্রত্যক্ষসাক্ষী এম হারুন অর রশিদ রিংকু বলেন, তালুকদার মাসউদ একজন পেশাদারী সাংবাদিক। তিনি একজন ইউপি সদস্য। তাকে দিনের বেলা প্রেসক্লাবে আটকে নির্মম ভাবে মেরে হত্যা করার ভাষা আমার নেই। তিনি আরও বলেন, প্রেসক্লাবের সদস্যরা আলামত নস্ট করেছে। যারা আলামত নস্ট করেছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, চিত্ত রজ্ঞন শীল, মোঃ হাসানুর রহমান ঝন্টু,মনির হোসেন কামাল, আবু জাফর সালেহ, হাফিজুর রহমান, মুশফিক আরিফ , রেজাউল ইসলাম টিটু , মিজানুর রহমান, হারুন-অর রশীদ রিংকু, রুদ্র রুহান, জহিরুল হাসান বাদশা,মোঃ সানাউল্লাহ, ইসহাক জুয়েল,আসাদুল হক সবুজ, জুলহাস আহম্মেদ, শাজনুস শরীফ, হিমাদ্রী কেশব এবং মামলার বাদী সাজেদা।
বাদি সাজেদা বলেন, আমার স্বামীর হত্যা কারীরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ায়। হাই কোর্টে জামিন আনতে যায়। যারা আলামত নস্ট করেছে। তারাও ঘুরে বেড়ায়। পুলিশ তাদের চোখে দেখে না। প্রেসক্লাবের সদস্যরা মিটিং করে আলামত নস্ট করে উল্টো আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে জাফর হাওলাদার। তাকে প্রেফতার করলে আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
পুলিশ সুপার বলেন, আমরা আসামীদের গ্রেফতার করার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দোষীরা কেহ পার পাবে না। যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তদন্তে প্রকাশ পেলে আমরা তাদেরও গ্রেফতার করব।
What's Your Reaction?