ভারতকে দুষলেন অলি আহমদ: বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ
বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র ধ্বংস এবং স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার’ জন্য ভারত সরকার সরাসরি ও পরোক্ষভাবে দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি ভারত সরকার তাদের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। আমরা বলতে চাই, আমরা অন্য কোনো দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা অন্য কোনো দেশের ক্ষতি করার মত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে চাই না, কারণ তা আমাদের ধর্মের পরিপন্থি। আমরা আশা করবো ভারত সরকার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকবে এবং বরং ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ এসব কথা বলেন। বিএনপির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে এলডিপিও। এই প্রথমবারের মতো এলডিপির সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অলি আহমদের পাশে বসা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তবে বিএনপি নেতা এখানে কোনো বক্তব্য রাখেননি।
ভারত সরকারের উদ্দেশে অলি আহমদ আরও বলেন, বর্তমান সরকার আপনাদেরকে আমাদের দেশের সমুদ্র বন্দর, স্থল বন্দর এবং বিভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। অনেকগুলো অসম চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে। যার ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারপরও কেন ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তা বোধগম্য নয়। দয়া করে, আমাদেরকে আমাদের মতো থাকতে দিন। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা পাকিস্তানকে দুই ভাগ করে তাদের দুর্বল করে দিয়েছি। তার এই বক্তব্যে পরিষ্কার বোঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের বন্ধু নয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৯৪৭ সালের পর উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়। গত কয়েক বছর ধরে ভারত সরকার বাংলাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো ভূমিকা পালন করছে।
বর্তমান সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে বাকশালি কায়দায় দেশ শাসন করছে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, এখন ক্ষান্ত হন। জনগণকে তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করার সুযোগ দিন। "আমি না থাকলে দেশ চলবে না" এই ধরণের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন।
অলি আহমদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে বাধ্য। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, অধ্যক্ষ কেকিউ স্যাকলায়েন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি প্রমুখ।
What's Your Reaction?