বিদ্যুৎ মিটারের দাম ও ভাড়ার যন্ত্রণাঃ সাধারণ জনগণের অভিযোগ
"প্রিপেইড বিদ্যুৎ মিটারের দাম ১৬০০ টাকা হলেও বছরের পর বছর কেন মাসিক ভাড়া কাটা হচ্ছে? জানুন গ্রাহকদের অভিযোগ এবং বিদ্যুৎ সংস্থার অযৌক্তিক ডিমান্ড চার্জ নিয়ে বিস্তারিত।"
দেশে সাধারণ জনগণের ভোগান্তির আরেক নাম বিদ্যুৎ মিটার। বর্তমানে প্রিপেইড মিটারের দাম ধরা হয়েছে ১৬০০ টাকা। প্রতি মাসে ৪০ টাকা করে কেটে নিলে ৪০ মাসে সে টাকা পরিশোধ হওয়ার কথা। কিন্তু ১৬০০ টাকা পরিশোধ হওয়ার পরও বছরের পর বছর প্রতি মাসে ৪০ টাকা করে কেটে নেওয়া হচ্ছে কেন?
গ্রাম বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, "কথা সত্য কিন্তু সাক্ষী দুর্বল, এ জন্য মামলা ডিসমিস।" নিজের টাকায় মিটার কিনে আবার মাসে মাসে তার ভাড়া দিতে হচ্ছে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে। তাই স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হয় মিটার ভাড়া মওকুফ করুন, নয়তো আমাদের জমির ভাড়া দিন, কারণ জমির ওপরে খাম্বা বসিয়েই তো ব্যবসা করছেন। নগদ টাকায় মিটার কিনে নিজের ঘরের দেওয়ালে লাগিয়ে যদি ভাড়া দিতে হয়, তাহলে আমার জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি ফ্রি থাকবে তার কারণ কী?
গ্রাহক নিজের টাকায় বিদ্যুতের মিটার ক্রয় করার পরও যদি প্রতি মাসে মিটার ভাড়া দিতে হয়, তাহলে বিদ্যুৎ সংস্থা আমাদের জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি পুতে লাইন টানিয়ে ফসলি জমিগুলো নষ্ট করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করার পরও আমাদের জমির ভাড়া দেবে না কেন?
বিদ্যুৎ বিলের নামে সরকার যে প্রতি মাসে কয়েক শ কোটি টাকা ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়া এবং ভ্যাট আদায় করছে তা ভর্তুকির চেয়ে অনেক বেশি। কোনো বিদ্যুৎ খরচ না করলেও ১০০ টাকা বিদ্যুতের মূল্য, ৫০ টাকা ডিমান্ড চার্জ এবং ২০ টাকা মিটার ভাড়া দিতেই হবে। প্রিপেইড মিটারে ভাড়া ৪০ টাকা, মেইন মিটার ২৫০ টাকা, কারণটা কী?
একজন ক্ষুদ্র গ্রাহক যিনি ৫০ ইউনিট বা তার কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাঁকেও কমপক্ষে ৭০ অথবা ৯০ টাকা দিতেই হবে, যা একজন বড় ভোক্তার জন্যও একই। এটি হাস্যকর এবং দুঃখজনক। মিটার ভাড়া না হয় বোঝা গেল, কিন্তু ডিমান্ড চার্জ কী? কিসের ডিমান্ড এবং তা ধনী গরিব সবার জন্য সমান কেন?
যে ভোক্তা ১০০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেন আর যে দরিদ্র লোকটি ১০ ইউনিট ব্যবহার করেন তাঁরা দুজনেই ৫০ টাকা দেবেন কোন যুক্তিতে? সঠিক বিল আদায় এবং অপচয় রোধ করার জন্য নিজেদের স্বার্থে পিডিবি, ডিপিডিসি, ডেসকো, আরইবি মিটার স্থাপন করেছে আর তার ভাড়া আদায় করছে গ্রাহকদের কাছ থেকে।
এ ধরনের অযৌক্তিক চার্জ পরিহার করে ইউনিট প্রতি মূল্য বাড়িয়ে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে পারে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ভোক্তাদের বিদ্যুৎ বিল বাড়লেও মোট বিল আগের তুলনায় কমে যাবে, বাড়বে না।
সরকারি ভর্তুকি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এখানে।
আর্টিকেল সোর্স প্রথম আলো
What's Your Reaction?