এমপি আনার বিএনপি নেতার হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। দুদিন ধরেই খবরের শিরোনাম হচ্ছেন এই নামটি। কয়েক দিন আগেই চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন আলোচিত এই সংসদ সদস্য। পরে জানা যায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। হত্যার তথ্যটি বেরিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয় নানা আলোচনা। কেন, কিভাবে তাকে হত্যা করা হলো এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা।
ইতোমধ্যে তার মৃত্যু ঘিরে দেখা দিয়েছে রহস্য। যার বেড়াজাল কাটতে তৎপর প্রশাসন। এখন প্রশ্ন হলো কে এই আনার? কিভাবে উঠে এসেছিলেন তিনি? কালীগঞ্জ উপজেলার পার-শ্রীরামপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর চার পুত্রের মধ্যে ছোট ছিলেন আনার। ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। অল্প বয়সে তিনি এ অঞ্চলের একজন জনপ্রিয় খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। ১৯৮৬ সালে ব্যবসা আর ৮৮ সালে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তৎকালীন বিএনপি নেতা ও পরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন। ১৯৯২ সালে কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হলে আনার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে আবদুল মান্নান বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তখন আনারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তারা দুজনই এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে আনার ভারতে চলে যান। সেখানে দীর্ঘদিন অবস্থানকালে তিনি ২০০৪ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে আবদুল মান্নান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য এবং আনার দলের সমর্থনে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে আবদুল মান্নানের বিরোধ হয়। ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আনার। টানা তিনবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার কথা বলে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা-গেদে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যান আনার। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কলকাতায় তার পূর্বপরিচিত বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। গোপালের সঙ্গে তার ২৫ বছরের পারিবারিক সম্পর্ক। পরের দিন কলকাতার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় আনার চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বলে গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে বের হন। তখন গোপালকে বলে যান, তিনি সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসবেন। এরপর আর বাসায় না ফেরায় ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় গোপাল বিশ্বাস একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর পর থেকে ঢাকা ও কলকাতা পুলিশ তার অবস্থান শনাক্তে কাজ করে আসছিল।
What's Your Reaction?