শিক্ষা অফিসারের দ্বিতীয় বিয়ে কান্ড : তথ্য ফাঁস করায় অফিস সহকারীকে লাঞ্ছিত

Jul 15, 2024 - 10:53
 0  214
শিক্ষা অফিসারের দ্বিতীয় বিয়ে কান্ড : তথ্য ফাঁস করায় অফিস সহকারীকে লাঞ্ছিত

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে বরগুনায় দ্বিতীয় বিবাহ করেন।তার এই দ্বিতীয় বিবাহের সংবাদ প্রথম স্ত্রী কে জানানোর অপরাধে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি গোলাম কবির কে তুলে নিয়ে মারধর করেন জেলা শিক্ষা অফিসারের দ্বিতীয় স্ত্রী ও বরগুনার সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার নিপা।

১৪ জুলাই সকাল অনুমান ১০টার সময় মায়ের জন্য ঔষধ কিনতে অফিসের বাইরে আসলে বরগুনা সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন লোক অটোরিক্সা করে তুলে নিয়ে যান জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ গোলাম কবিরকে। বরগুনা টাউনহল সংলগ্ন ব্রিজের উত্তর পশ্চিম পাড়ে জনৈক সোহরাব মেম্বারের বাসায় নিয়ে কবিরকে ব্যাপক মারধর করেন লাভলি আক্তার নিপা। 

কবিরকে মারধর করলে ওই এলাকার এক ব্যক্তি নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে জানালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বরগুনা সদর থানা পুলিশ। পরে পুলিশ কবিরকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসেন।

মারধরের ঘটনা ছড়িয়ে পরলে শুরু হয় নানা তালবাহানা। সন্ধ্যার পরে জেলা শিক্ষা অফিসারের দ্বিতীয় স্ত্রী নিপা জেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত বেশ কয়েকজনকে নিয়ে থানায় এসে কবিরকে কোন অভিযোগ না দিয়ে সমঝোতা করতে রাজি করান।

গোলাম কবির জানান, থানা পুলিশের মাধ্যমে লিখিত দিয়ে আপোষ মিমাংশায় যাবো। আমি জেলা শিক্ষা অফিসারের স্ত্রীকে ফোন দিয়ে তার দ্বিতীয় বিবাহের কথা বলেছি সেটাই আমার অন্যায় ছিল। আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কয়েকটি চড় থাপ্পর মেরেছে। আমার এ বিষয়ে আর কোন অভিযোগ নাই।

বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিপা জানান, কবির আমাকে নির্বাচন থেকেই বিরক্ত করেছে। আমি এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি। কবিরকে মারধরের বিষয় জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকে বলেন, বরগুনায় আপনি একাই সাংবাদিক, মাস্তানি করেন, এটা আমার পারিবারিক বিষয়।

এদিকে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মাদ জসিম উদ্দিন ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, আমি বলব বিবাহের ঘটনা সত্য। তাতে ওদের কি? ওরা কি খাওন পড়ন দেয়? আমার স্ত্রী কি কোন অভিযোগ করেছে? আমার পার্সোনাল বিষয়ে কেন আমার বউয়ের কাছে ফোন দিল? আমি এখানে ৫০টা বিয়ে করলেও সে বলতে কে? পুলিশ যেহেতু কবিরকে নিয়ে এসেছে দেখি কি হয়।

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদর থানার সামনে অনেক শিক্ষক হাজির হন। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে অনেক শিক্ষকই বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিপাকে বিবাহ করেছেন সেটা অনেকেই জানি। একজন সরকারী কর্মচারীকে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে মারধর করা কোনভাবে কাম্য নয়। তারা এ ঘটনার সমালোচনাও করেন।

উদ্ধার হওয়া গোলাম কবির কোন অভিযোগ দিতে না চাওয়ায় রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে মুচলেকা নিয়ে গোলাম কবির এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিপাকে থানা থেকে নিজ নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানা পুলিশ। পুলিস আরও জানান, উভয় পক্ষই আপোষ মিমাংশা চেয়েছে। মুচলেকা দিয়ে উভয় পক্ষ আপোষ হয়েছে।



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow