এখন পরিস্থিতি অন্য রকম, তাই ঘুষের টাকা একটু বেশি লাগবে’, অতঃপর হাতেনাতে আটক
আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। কার্যালয়টির অফিস সহকারী মো. ফাহিম মিয়া ড্রাগ লাইসেন্স নিতে আসা কয়েকজনকে জানান, “এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, তাই ঘুষের টাকার পরিমাণও বেড়েছে।” লাইসেন্সপ্রত্যাশী একজন সেই অনুযায়ী টাকা নিয়ে আসেন এবং পরে ওই অফিস সহকারীকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর তখন অফিসে ছিলেন না, তিনি ছুটিতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তাহিরপুর উপজেলার বড়ছরা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানান, তাঁর একটি ফার্মেসির নিবন্ধনের জন্য যোগাযোগ করলে অফিস সহকারী মো. ফাহিম মিয়া আগে ২০ হাজার টাকা ঘুষের দাবি করেন। পরবর্তীতে, তিনি পরিস্থিতির পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে আরও ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। অবশেষে, আমিনুল ইসলাম ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন এবং আজ বৃহস্পতিবার ওই টাকা নিয়ে কার্যালয়ে যান। এর আগে তিনি শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে অবহিত করেন। ফাহিম মিয়া ঘুষের টাকা নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীরা তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
আটকের সময় ফাহিম মিয়া প্রথমে নিজেকে অফিসের কেউ না বলে দাবি করেন, কিন্তু পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নিজের পরিচয় দিতে বাধ্য হন এবং তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর ছুটিতে আছেন বলে জানান। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ড্রাগ লাইসেন্স দেওয়ার জন্য একটি কমিটি আছে এবং এই কমিটির সদস্যদের ঘুষের টাকা ভাগ দিতে হয়। শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তার একটি তালিকাও পেয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠন ওসমান গনী বলেন, “আমরা মো. ফাহিম মিয়াকে ঘুষের টাকাসহ আটক করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সুনামগঞ্জ জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মো. আবু জাফর বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন এবং ঘুষের বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি বলেন, “সুনামগঞ্জে যোগদানের পর কাউকে ড্রাগ লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।”
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফেদাউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা ঘুষের টাকাসহ এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরেছেন। ঘুষের এই কারবার বন্ধ করা উচিত।
What's Your Reaction?