দিনমজুর থেকে হঠাৎ কোটিপতি, টাকার প্রভাবে ছেলে যুবলীগ নেতা!
দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। রাজনীতি না করা ব্যক্তিরাও পেয়েছে পদপদবী। কোনদিন ছাত্রলীগ না করা ব্যক্তিও হয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর এসব তথ্য সামনে বেরিয়ে আসছে। বরগুনার ফুলঝুড়ি এলাকার মোঃ শহিদ মিয়া গত ১৬ বছরের ব্যবধানে দিনমজুর থেকে হয়েছেন কোটিপতি। ছেলে জাহিদুল ইসলাম (সুমন) কে বানিয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। ছাত্র রাজনীতি না করা ব্যক্তিকে দলীয় পদ দেয়ায় দলের মধ্যেও ছিল কোন্দোল।
এলাকাবাসীর দাবী শহিদ মিয়া শুরুর জীবনে দিনমজুরের কাজ করতেন। হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাঝুড়ে। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি তারা। তাদের দাবী শহিদ মিয়া টাকার প্রভাবে অনেক কিছু করতে পারেন। যেমন করে তার ছেলে রাজনীতি না করা স্বত্ত্বেও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তাই কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পান না।
শহিদ মিয়া বরগুনার ফুলঝুড়ি চৌরাস্তা এলাকায় এলজিইডির সড়কের পাশে একটি বাড়ি নির্মান করেছেন। সেখানে সড়কের পাশের রাস্তাও দখল করেছেন। অবশ্য ওই বাজারের সবারই একই অবস্থা। সড়কের পাশে সরকার কর্তৃক রোপিত নারিকেল গাছ কর্তন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এলাকায় করেছেন একটি বালিকা হাফিজি মাদ্রাসাও। 'রাবিয়া খাতুন বালিকা ক্বিরাতুল কোরআন হাফিজি মাদ্রাসা' এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং নামের মাদ্রাসার ৪৮ শতাংশ জমিও শহিদ মিয়া কিনেছেন। সেই জমিতেই পরিচালিত হচ্ছে মাদ্রাসাটি।
এলাকাবাসীর গুঞ্জন রয়েছে ঢাকায় কাজ করার সুবাদে নাম না জানা এক ঠিকাদারের টাকা আত্মসাৎ করে চলে আসেন গ্রামে। ঠিক কত টাকা সেটি জানেন না এলাকাবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ঢাকা থেকে ফিরে আসার পর তৎকালীন সময় বাড়িতে ঢাকার কিছু লোকজন আসে এবং টাকা নিয়ে চলে এসেছে বলে জানান। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি পিছনে। ওই টাকা দিয়েই বড় বড় কোম্পানিগুলোর কাজ চুক্তি ভিত্তিক করে আসছেন তিনি। সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীও করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
শহিদ মিয়ার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানতে চান কেন তার বাড়িতে গিয়েছিলো। পরে বরগুনায় আসলে এসব বিষয়ে জানতে চাই তার কাছে। তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নন। তবে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার দাবী তিনি ছোট বেলা থেকে কাজ করেই এসব কিছুর মালিক হয়েছেন। ছেলের রাজনীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি দাবী করেন, তার ছেলে কখনও ছাত্র রাজনীতি করে নাই। ওই ইউনিয়নে যুবলীগের কমিটি দেয়ার সময় যোগ্য কোন প্রতিদ্বন্দি না থাকায় তার ছেলে সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন।
বরগুনায় দূর্ণীতি দমন কমিশনের কোন কার্যালয় নেই। পটুয়াখালীর আঞ্চলিক কার্যালয় বরগুনার দায়িত্বে আছেন। সেক্ষেত্রে এই জেলার দূর্ণীতির অভিযোগগুলো চাপা পরে থাকে বলে দাবী করেন সুশীল সমাজের লোকজন।
What's Your Reaction?