মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সর্বশেষ জনমত জরিপে কে এগিয়ে, কমলা না ট্রাম্প

Nov 3, 2024 - 18:36
 0  167
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সর্বশেষ জনমত জরিপে কে এগিয়ে, কমলা না ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি। আগামীকাল সোমবার বাদে পরশু মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন দেশটির ভোটাররা। এই নির্বাচনও ২০২০ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কথা ছিল।

 কিন্ত গত জুলাইয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হওয়ার দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। এর মধ্য দিয়ে ডেমোক্রেটদের প্রার্থী হয়েছেন কমলা। এখন বড় প্রশ্ন হলো, কমলা হ্যারিস কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, নাকি দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে কার জয়ের সম্ভাবনা বেশি, তা যাচাইয়ে নিয়মিত জনমত জরিপ হয়। সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোয় কমলা, নাকি ট্রাম্প এগিয়ে আছেন, তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

জরিপে জাতীয়ভাবে কে এগিয়ে
জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, আজ রোববার পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহগুলোয় কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা।

এর পর থেকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিকে পূর্বের অবস্থানই ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস। তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।

একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় কে এগিয়ে
যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্য আছে ৫০টি। অতীতের নির্বাচনগুলোয় দেখা গেছে, বেশির ভাগ রাজ্য নির্দিষ্ট কোনো একটি দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকেন। এসব রাজ্যে নির্দিষ্ট দলের প্রার্থী জয়ী হয়ে থাকেন। এ কারণে যেসব রাজ্যের নির্দিষ্ট দলকে ভোট দেওয়ার ইতিহাস নেই, সেসব রাজ্য ভোটের ফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এমন রাজ্য রয়েছে সাতটি, যাদের ‘দোদুল্যমান রাজ্য’ বলা হয়ে থাকে।

দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্য হলো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিন। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোটারদের নিয়ে করা সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোয় দেখা গেছে, এসব অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প ও কমলার মধ্যে ব্যবধান এতই কম যে কোন প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন, তা বলা মুশকিল। ফলে আন্দাজও করা যাচ্ছে না যে কোন প্রার্থীর পাল্লা ভারী।

হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার পর থেকে জরিপে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থন ওঠানামা করতে দেখা গেছে। আগস্টের শুরু থেকে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা ও নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে সমর্থন কয়েক দফা কম–বেশি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ কখনো একজন এগিয়ে ছিলেন, তো কোনো সময় অন্যজন। তবে এ মুহূর্তে এসব রাজ্যে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আগস্টের শুরু থেকে জনমত জরিপে দোদুল্যমান অন্য তিন অঙ্গরাজ্য মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে এগিয়ে রয়েছেন কমলা হ্যারিস। তবে জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তাও ওঠানামা করতে দেখা গেছে। এসব অঙ্গরাজ্যে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে কখনো দুই পয়েন্ট, তো কখনো তিন পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। কিন্ত এখন ব্যবধান আরও কমেছে। এ মুহূর্তে পেনসিলভানিয়ায় অল্প ব্যবধানে এগিয়ে ট্রাম্প।

এই তিন অঙ্গরাজ্যই একসময় ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ২০১৬ সালে সব উল্টে যায়। আট বছর আগের সেই নির্বাচনে তিন অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেন ট্রাম্প। সেবার তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০২০ সালের নির্বাচনে এসব অঙ্গরাজ্যে জয় পান ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন। এবারও কমলা জয় ধরে রাখতে পারবেন কি না, তা–ই দেখার বিষয়।



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow