২৪ ঘণ্টা ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বকেয়া বেতনের দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরীর মালিকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা ওই কর্মসূচি পালন করছেন।
মহাসড়ক অবরোধের কারণে উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। অনেকে আবার বিকল্প পথে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে শুরু হওয়া শ্রমিকদের অবরোধ আজ রোববার সকাল পৌনে ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এ ছাড়া আজ শ্রমিক আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে জেলার ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে কথা হয় কারখানা শ্রমিক মো. সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ এ পর্যন্ত কয়েকবার মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু বেতন পাইনি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতক্ষণ বেতন না পাব, ততক্ষণ মহাসড়ক ছাড়ব না।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানাটি অবস্থিত। ওই কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা না দিয়ে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখেছে। শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা মালেকের বাড়ি কলম্বিয়া মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। শ্রমিকদের বেতন দ্রুত পরিশোধ করা হবে, এমন আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে শ্রমিকেরা বেতন পাননি।
গতকাল সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকেরা আবার কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। শ্রমিকদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে গেলে একপর্যায়ে সকাল পৌনে ৯টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন তাঁরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় থানা-পুলিশ শ্রমিকদের নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। মহাসড়ক অবরোধের কারণে ওই সড়কের উভয় দিকে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, যানজট দক্ষিণের দিকে টঙ্গীর কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে। অনেক গাড়ি বিকল্প পথে চলাচলের ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘কয়েক দফা শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত তাঁদের বকেয়া আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অতীতে মালিকপক্ষ কথা রাখেনি, এমন অভিযোগ তুলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেননি।’ শ্রমিক আন্দোলনসহ নানা কারণে জেলার ১৩টি কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
What's Your Reaction?