কয়রার আলোচিত আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল গ্রেপ্তার

Nov 28, 2024 - 01:44
 0  95
কয়রার আলোচিত আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল গ্রেপ্তার
কয়রার আলোচিত আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল গ্রেপ্তার

খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম বাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বুধবার ঢাকার হজরত শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে তাকে পাইকগাছা থানায় আনা হয়। পাইকগাছা থানার মামলার আসামী হওয়ায় তাকে পাইকগাছা আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।


এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গন অভূর্থানে সরকার পতনের পর বাহারুল ইসলাম পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান। ওই দিন তাঁর বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে জমি ও ঘের দখল, সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।


পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন জানান, বাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে পাইকগাছা থানার একটি দল গতকাল রাতেই ঢাকায় রওনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে থানায় আনা হয়েছে। উপজেলার আগড়ঘাটা এলাকায় ট্রলারে হামলার অভিযোগে গত ২৬ আগষ্ট ফসিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।


স্থানীয়দের অভিযোগ, আ, লীগ নেতা ও কয়রা সদরের ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম দলের পদ পদবী কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। ২০১৯ সালে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভিপি তালিকাভুক্ত ৪০ বিঘা জমি দখল করেন এবং এর শ্রেণি পরিবর্তন করে প্লট আকারে বিক্রি করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কয়রা সদরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ কাঠা জমি দখলে নিয়ে দোকান ভাড়া দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সামনে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ১৬ শতক জমির ওপর পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করে হাসপাতাল বানিয়েছেন তিনি।


এছাড়া তার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, অধ্যক্ষ, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি সহ নানা শ্রেনির মানুষ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কয়রা সদরে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। তখন বাহারুলের নেতৃত্বে ২-৩ মাসের মধ্যে ৬০টি চিংড়িঘের দখল করা হয়। সংবাদপত্রে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বাহারুলের নেতৃত্বে কয়রায় প্রেস ক্লাবে হামলা করা হয়। এতে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক হুমায়ুন কবির ও সমকাল পত্রিকার প্রতিনিধি হারুনার রশিদ গুরুতর আহত হন। পরে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে এককভাবে কয়রা নিয়ন্ত্রন করে। সেই থেকে সে বেপরোয়া হয়ে উঠে। ২০১২ সালে মৎস্য ঘেরে লবন পানি উত্তোলনের বিরোধিতা করায় বাহারুল সহ তার লোকজন সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলুকে কয়রা বাজারে মারপিট করে আহত করে। ২০২২ সালে কয়রায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোনাপানির ঘের বন্ধের নির্দেশনা আসে। এ সময় বাহারুল তাঁর বাহিনী দিয়ে প্রথমে লোনাপানি উত্তোলনের পাইপ ভেঙে দেওয়া শুরু করেন। পরে ঘেরপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে লোনাপানি তুলে ঘের করার ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানাবিধ অভিযোগ।



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow