পঁচাত্তরের সঙ্গে বর্তমান সময়ের মিল দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের বর্তমান সময়টা কঠিন আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে আমরা যে ধরনের...
বাংলাদেশের বর্তমান সময়টা কঠিন আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে আমরা যে ধরনের অবস্থান দেখেছিলাম, মনে হয় এখনও সেই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় শোক দিবস নিয়ে এক আলোচনা সভায় এমন শঙ্কার কথা জানান মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আগে দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। বহুলোক (বিদেশিরা) বাংলাদেশে আনাগোনা করে। কিসিঞ্জার সাহেবও (সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার) ঢাকা শহরে ঘুরে যান। বহু লোক দেশে আনাগোনা করে। অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়।
৭৫-এর সঙ্গে বর্তমানে প্রেক্ষাপটের সাদৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন ড. মোমেন। তার ভাষায়, আজকের বাংলাদেশের মধ্যে সে ধরনের একটা অস্থিতিশীলতা দেখি। একটা সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে। শেখ হাসিনা গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ইজ্জত বাড়িয়েছেন। এত সব করার পরও বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে আমরা যে ধরনের অবস্থান দেখেছিলাম, এখনও সেই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছেন। মনে হচ্ছে, একটা কঠিন সময় আসছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রথম রক্ষাকবচ আখ্যা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক থাকার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের বিশেষ অবস্থান নিতে হবে, বিশেষ করে আমরা যারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছি, তারা হচ্ছি প্রথম ডিফেন্ডার। আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
১৯৭৪ সালের আলোচিত বাসন্তী দাসের উদাহরণ টেনে মোমেন বলেন, এখন বিভিন্ন ধরনের অপ্রচার হচ্ছে। তখন একটি বাসন্তী হয়েছে। এখন শত শত বাসন্তীর খবর আমরা পাই। কিন্তু আমার খুব দু:খ হয়, এসব মিথ্যা অপ্রচার। কিন্তু তার যথেষ্ট উত্তর আমরা এখনও দিতে পারি না। অপপ্রচারগুলো বন্ধ করতে হবে।
অপপ্রচার বন্ধে এখনও দুর্বলতা রয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের কোথাও দুর্বলতা রয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগত দুর্বলতা নাই। তবুও কোথাও জানি অসুবিধা আছে। এগুলো আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। সহকর্মীদের স্বেচ্ছায় এসব নিয়ে ভাবতে হবে। যেন ৭৫-এর পুনরাবৃত্তি চাই না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক বিনির্মাণে ভূমিকা পালন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন তিনি। ঘাতকের আঘাত বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নিলেও যতদিন বাংলাদেশ থাকবে বঙ্গবন্ধুর নামও থাকবে।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে। ঘাতকরা সেদিন বঙ্গবন্ধুকে খুন করে ফেললেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধু। এ বছর বিশ্বের পাঁচ দেশ থেকে কূটনীতিকরা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ট্রেনিং নিতে এসেছে। আমরা তাদের সামনে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরছি। এতে করে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের জানা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ১৪ দলের সমন্বায়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
What's Your Reaction?